September 21, 2024, 3:41 pm

সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধে কুড়িগ্রামে জলবায়ু ধর্মঘট খুলনা দৌলতপুর রেলস্টেশন ও মহসিন মোড় কাঁচাবাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান সংসার রেখে ডলিতে আসক্ত কয়েছ৷ বিয়ে ছাড়াই এক সাথে বসবাস ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তিন লাখ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ যশোরের সাবেক এসপি আশরাফুল সহ ১০ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা কুড়িগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় প্রভাবশালীদের মৎস্য চাষ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ক্ষেতলাল পৌরসভার বাসিন্দা উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী আটক কুড়িগ্রামের চিলমারীতে আশ্রয়নের ঘর বানিজ্য

সরকারি চাকরির জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে: ফখরুল

সরকারি চাকরির জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে: ফখরুল

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার শিক্ষাব্যবস্থা, হাসপাতাল, ফ্যাক্টরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঝাঁঝরা করে ফেলেছে। ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ বিভিন্ন লীগকে তারা চাঁদা দিয়ে আর পেরে উঠতে পারছে না। এজন্য তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকারি অফিসে চাকরি দেওয়ার নামে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে; এটাকেও আওয়ামী লীগ উন্নয়ন বলে প্রচার চালাচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের সব আদর্শকে ধ্বংস করছে। আসল কথা হলো, আওয়ামী লীগের আদর্শ বলতে কিছুই নাই। যারা বলেছে, আগামি নির্বাচনে দেশনেত্রী গেলে আমরা যাব, আরে ভাই দেশনেত্রী তো যাবেনই, আবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগই থাকবে না। গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে হবে। ২০১৮ সাল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাল। ২০১৮ সাল বিএনপির সাল, ২০১৮ সাল তারেক রহমানের সাল, ২০১৮ সাল এই দেশের গণমানুষের সাল যারা লড়াই করে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে এনেছে। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নল দেখিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করছে আওয়ামী লীগ সরকার, আবার তারা বলছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা। বাংলাদেশের মানুষকে প্রতারণা দিয়ে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ, আবার তারা বলছে গণতন্ত্রের কথা, এদের লজ্জা নাই। এদিকে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও আসছে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির সরকার গঠনের আশা দেখছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী হয়ে উঠছি অনেক কারণে। আমরা বলতে চাই, ২০১৮ সাল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাল, ২০১৮ সাল বিএনপির সাল, ২০১৮ সাল তারেক রহমানের সাল, ২০১৮ সাল এদেশের গণমানুষের সাল; যারা লড়াই করে, যুদ্ধে করে এদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এসেছে তাদের সাল। আমরা আছি, লড়াই করেছি। লড়াই করে যাচ্ছি, লড়াই করব এবং ২০১৮ সালে আমরা অবশ্যই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। একাদশ নির্বাচনে বিএনপি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই অংশ নেবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচনে যাব, দেশনেত্রী নির্বাচনে যাবেন। উনারা (ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ) থাকবেন না। কারণ উনারা…, নির্বাচন করতে হবে না। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আগের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখেও একই ধরনের নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। দাবিমতো নিরপেক্ষ সরকার না হলে নির্বাচনে না গিয়ে তা ঠেকানোর হুমকি দিয়ে আসা দলটির মহাসচিব এবার নির্বাচনে যাওয়ার কথা বললেও তা নিরপেক্ষ সরকারেই অধীনেই হতে হবে বলছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, কথা খুব স্পষ্ট- নির্বাচন তো দিতেই হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সকল দলের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে। অবশ্যই তা সুষ্ঠু-অবাধ হতে হবে, সেই নির্বাচন হবে; ইনশাল্লাহ সেই নির্বাচনে অবশ্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় দল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে ‘রাজনীতির বিজ্ঞানের’ পাঠ দেন বিএনপি মহাসচিব। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, চোখ-কান খোলা রাখুন। একটা কথা আমাদেরকে সকলকে মনে রাখতে হবে, এটা রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞান; আমাদের লক্ষ্য কী? ক্ষমতায় যাওয়ার। আমরা সবসময় শুধু এখানে মিটিং করব, আর ডুগডুগি বাজাব- তার জন্য তো আসিনি। আমরা ক্ষমতায় যাব, ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের মেহনতি মানুষের সমস্যার সমাধান করব, চাকরির ব্যবস্থা করব, আমরা দেশের উন্নয়ন করব; সেজন্য আমরা রাজনীতি করছি। ‘এই রাজনীতির একটা বিজ্ঞান আছে’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিজ্ঞানটা কী? সংগঠন, আন্দোলন এবং নির্বাচন। এই তিনটা জিনিস আমাদের একসাথে করতে হবে। সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে, আন্দোলন করতে হবে এবং নির্বাচন করে আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। এই বিষয়গুলো সকলকে মনে রাখতে হবে। ক্ষমতাসীন সরকারকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যায়িত করে তাদের হটাতে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন বলে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলেও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তার বক্তব্য উদ্ধৃতি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে উনি (কামাল হোসেন) এতদিনে এই কথাটা উপলব্ধি করেছেন। আমরা বরাবরই বলে আসছি যে একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করুন। বেগম জিয়া ডাক দিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য দরকার। এই ভয়াবহ, ফ্যাসিস্ট, একনায়ক সরকারকে সরাতে না পারলে এই বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে জনগণের উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশ বর্তমানে ‘ঘুষ-দুর্নীতিতে’ ছেয়ে গেছে বলেও অভিযোগ এই বিএনপি নেতার। তিনি বলেন, একটি পত্রিকা বলছে, উন্নয়নে নামে যে একটা ধু¤্রজ¦াল সৃষ্টি করা হয়েছে সেই উন্নয়ন আসলে একটা তাসের ঘর। শিক্ষিত যুবকদের ৪৭% কোনো চাকরি পায় না। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। টাকা দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পাবেন, টাকা দেবেন মেডিকেল কলেজের অনুমতি পাবেন, টাকা দেবেন ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনির্ভাসিটির অনুমতি পাবেন। গুম ও টাকা- এর উপরেই এখন সবকিছু চলছে। সর্বত্র দুর্নীতি চলছে। প্রতিদিন পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা একেবারে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লোপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। সব দিক দিয়ে, সব স্তরে সব সেক্টরে বাংলাদেশকে ফোকলা করে ফেলেছে। যে কলসের মধ্যে পানি নাই, শব্দ করে বেশি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে এবং সহদপ্তর সম্পাদক এস কে সাদীর সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন কৃষক দলের সহসভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষকদলের সহসভাপতি এম এ তাহের, নাজিম উদ্দীন মাস্টার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন মো. জসিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আলিম হোসেন, অধ্যক্ষ মো. সেলিম প্রমুখ।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর